নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স বাড়লেও ফেব্রুয়ারি মাসে তা কমেছে। ফেব্রুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার, যা আগের মাসের চেয়ে প্রায় ২১ কোটি ডলার কম। জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭০ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালানাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসের মধ্যে ৬ মাসেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে, বেড়েছে ২ মাসে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে একই চিত্র দেখা গেছে। ওই অর্থবছর শেষে রেমিট্যান্স আয় আগের চেয়ে বেশি ছিল।

২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসের মধ্যে রেমিট্যান্স এসেছে জুলাইয়ে ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার, আগস্টে ১৮১ কোটি, সেপ্টেম্বর মাসে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বর ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ, ডিসেম্বরে ১৬২ কোটি ৯০ লাখ, জানুয়ারিতে ১৭০ কোটি ৪৪ লাখ এবং ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।

আগের অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার, আগস্টে ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ, সেপ্টেম্বরে ২১৫ কোটি ১০ লাখ, অক্টোবরে ২১০ কোটি ২১ লাখ, নভেম্বরে ২০৭ কোটি ৮৭ লাখ, ডিসেম্বরে ২০৫ কোটি, জানুয়ারিতে ১৯৬ কোটি ১৯ লাখ এবং ফেব্রুয়ারিতে ১৭৮ কোটি ৫ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

ব্যাংকাররা বলছেন, আগে প্রবাসীদের বৈধ পথে পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা ছিল ২ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ টাকা পাঠালে ২ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হতো। চলতি বছরের শুরুতে এ প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা হয়েছে। এতে প্রবাসীরা বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে উৎসাহ পেয়েছেন। তখন রেমিট্যান্স বেশি এসেছে। তবে ফের করোনা বেড়ে যাওয়া প্রবাসীদের আয় কমেছে। এ কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ গত মাসে ছিল ধীর গতির। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ভবিষ্যতে প্রবাসীদের আয় বাড়বে বলে মনে করছেন তারা।

তারা আরও বলেন, গত অর্থবছর সারাবিশ্বে করোনা মহামারির মধ্যে অনেক প্রবাসী কেউ চাকরি হারিয়ে কিংবা ব্যবসা বন্ধ করে সব অর্থ পাঠিয়ে দিয়ে দেশে চলে এসেছিলেন। করোনা মহামারির সময় অবৈধ চ্যানেলগুলো বন্ধ ছিল বলে বাধ্য হয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ফলে গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স আয় রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল।

উল্লেখ্য, ২০২০-২১ অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে রেমিট্যান্স আহরণ হয়েছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছর প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার।